টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অন্যতম লক্ষ্য বাল্যবিয়ে বন্ধে তার এ অর্জন ইতিবাচকভাবেই দেখছে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
বাল্যবিবাহ বন্ধে এসিল্যান্ড আনিসুরের এ অবদানের জন্য, গত বছরের আন্তর্জাতিক পাবলিক সার্ভিস দিবসে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দীকা। এছাড়া গত বছর জাতীয় কন্যা শিশু দিবস উপলক্ষে তাকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করেন সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ।
নিষ্ঠার সাথে কাজ ও দায়িত্ব পালন করে যশোরে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সালে ভেজাল বিরোধী অভিযানে সমগ্র দক্ষিণবঙ্গে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। ২০১৭ সালের শেষ দিকে বদলি হন সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায়। তিনি সেখানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবেও দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।
সেসময় দুটি ইলিশ প্রজনন মৌসুমে নিয়ম না মানায় ১২৪ জন জেলেকে কারাদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়া এ বছর যমুনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে সিরাজগঞ্জ সদরে ১১৬ জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করে ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোতে অবদান রাখেন। সেই সাথে উপজেলা সকল পাবলিক পরীক্ষা থেকে নকল দূর করেছেন। চৌহালী উপজেলায় কর্তব্যরত থাকার ৩৩ সপ্তাহে ৩৪টি বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন।
পরবর্তীতে বদলি হন সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে। ইতোমধ্যে একদিনে সাতটি বাল্যবিয়ে বন্ধ করে রেকর্ডসহ ১২ মাসে ১৬৯টি তৃতীয় শ্রেণি থেকে কলেজ পড়ুয়া ছাত্রীদের বাল্যবিয়ে বন্ধ করেন।
এ সময়ে বাল্যবিয়ে বন্ধে সদর উপজেলায় ১২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয় ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে বর ও কনের বাবার মুচলেকাও নেয়া হয়।
শুধু বাল্যবিয়ে ঠেকানোই নয়, সেই সাথে অসহায় গরিব তিন ছাত্রীর পড়াশুনার দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি।
ওই এলাকার বিশিষ্টজনেরা মনে করেন, এসিল্যান্ড আনিসুর রহমানের মতো সবাই যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসেলে বাল্যবিয়ের অভিশাপ থেকে দেশ মুক্ত হতে পারবে।